রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর অফিস:
কার্তিকের মাঝামাঝি এসে সামনে অগ্রহায়ণে যখন কৃষকের মুখে হাসি ফোঁটার কথা, ঠিক তখনই উত্তরাঞ্চলে নেমেছে টানা বৃষ্টি। তিন দিনের লাগাতার বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই বৃষ্টিতেই কাবু হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের প্রান্তিক জনপদ। পূবের বাতাসে হেলে পড়েছে আমন ধান, ক্ষেতে পানি জমে নষ্ট হচ্ছে আগাম শাক-সবজি ও আলুর চারা।
গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার (০১ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত বিরামহীন বৃষ্টি ও ঠান্ডা বাতাস বইছে। এতে শীতের আগাম বার্তা পাওয়া গেলেও বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও কৃষকরা। হাট-বাজারে ভিড় কমে গেছে, দিনমজুররা কাজ না পেয়ে ঘরে বসে আছেন। ফলে, পরিবারে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা ও অস্বস্তি।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এই সময়টায় ধান কাটার প্রস্তুতি থাকে পুরোদমে। কিন্তু, বৃষ্টি ও বাতাসে অনেক ধান ক্ষেতেই হেলে পড়েছে। এতে কাটা ও শুকানোর কাজ ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে যারা আগাম আলু ও শাক-সবজি রোপণ করেছিলেন তাদের ফসলের ক্ষেতেও দেখা দিয়েছে ক্ষতির শঙ্কা। মাঠে জমে থাকা পানিতে চারা পচে যেতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, ধান কাটার সময় বৃষ্টি আসায় বড় বিপদে পড়েছি। ক্ষেত ভিজে গেছে, ধান শুকাতে পারছি না। আবার, আলুর চারা রোপণ করেছিলাম, সেগুলাও নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় আছে।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বৃষ্টি এখনও ‘সহনীয় মাত্রায়’ আছে। ভারি বর্ষণ না হওয়ায় ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হবে না বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃষ্টি কিছুটা অসুবিধা তৈরি করলেও এখনও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়নি। পানি দ্রুত নেমে গেলে ক্ষতির শঙ্কা থাকবে না।
এদিকে, কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আগামীকাল রবিবার থেকে বৃষ্টি কমবে। তবে, আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমে শীতের অনুভূতি বাড়বে।