
নয়ন হোসেন,নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান বৈষম্যের চিত্র আবারও সামনে এনেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ২০২৫ সালেও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দশম গ্রেডে আটকে থেকে বেতন-গ্রেড, পদোন্নতি ও পেশাগত স্বীকৃতির ঘাটতিতে ভুগছেন। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সোমবার চার দফা যৌক্তিক দাবি তুলে ধরেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনসহ সব শিক্ষক এসব দাবিতে একমত পোষণ করেন।
শিক্ষকদের দাবি, মাধ্যমিক শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষা, প্রশাসনিক কাঠামো সুসংহতকরণ এবং পদোন্নতির জটিলতা দূর করতে পৃথক একটি অধিদপ্তর গঠন করা সময়ের দাবি। নবম গ্রেড এন্ট্রি পদ চালু না থাকায় শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন–গ্রেডে পিছিয়ে আছেন।
সহকারী ও সিনিয়র শিক্ষক পদে দীর্ঘমেয়াদি পদোন্নতির স্থবিরতা এবং প্রশাসনিক জটিলতায় শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকরা। তাদের অভিমত—দ্রুত নিয়োগ, বদলি এবং পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু হলে শিক্ষার্থীরাও উন্নতমানের শিক্ষা পাবে।
বহু শিক্ষক নিয়মিত কর্মরত থাকলেও টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড থেকে বঞ্চিত। বকেয়া পরিশোধ ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার বলে মন্তব্য করেন তারা।
শিক্ষকদের দক্ষতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য অর্জিত বিএড/এম.এড ডিগ্রির সম্মানজনক ইনক্রিমেন্ট বন্ধ থাকায় মনোবল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানান শিক্ষকরা। তারা এ সুবিধা দ্রুত পুনর্বহালের দাবিও জানান।
হরিপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন,
“দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর শিক্ষকরা যখন নিজেদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত থাকেন, তখন শিক্ষা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়াটা স্বাভাবিক। আমাদের চার দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে দীর্ঘদিনের বৈষম্য দূর হয়ে শিক্ষা কাঠামো আরও আধুনিক, সুশৃঙ্খল ও যুগোপযোগী হবে।
”শিক্ষকদের অভিমত
বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা বলেন, সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের বহুদিনের বঞ্চনা ও পেশাগত বৈষম্য দূর না হলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। তাই দাবি পুরণের মাধ্যমে শিক্ষকদের মর্যাদা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করাই সময়ের প্রয়োজন।
হরিপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আশা প্রকাশ করেন—সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে ৫২ বছরের প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য দূর হবে এবং সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের ন্যায্য স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠিত হবে।