
মো. নূরেআলম রায়হান,নিজস সংবাদদাতা:
সারা বিশ্বের ন্যায় রাজধানী ঢাকায়ও যথাযোগ্য মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের উদ্যোগে এক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে বিভিন্ন পেশাজীবী, সাধারণ নাগরিক, সাংবাদিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা (আসফ)–এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুল হক বলেন,
“অসহায় ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। রাষ্ট্রের কাছে আমাদের একমাত্র দাবি—অধিকারবঞ্চিত মানুষদের অধিকার নিশ্চিত করা। দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। মব সহিংসতা, অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার, সীমান্ত হত্যা, প্রবাসী শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন, নারী-শিশু নির্যাতন, সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় সীমাবদ্ধতা এবং ডিজিটাল নজরদারির মতো ঘটনাগুলো জরুরি ভিত্তিতে সমাধান প্রয়োজন।”
অন্যান্যের মধ্যে চীফ অ্যাডভাইজার মো. মাহবুব ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্যে বলেন,
“ন্যায়ের পথে কাজ করাই আমাদের লক্ষ্য। মানবজাতির দুঃখ–দুর্দশা দূরীকরণে আমরা কাজ করি। ভারতীয় সীমান্তে আগ্রাসন ও হত্যা অব্যাহত থাকা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ দৃষ্টান্ত, যা বন্ধ হওয়া জরুরি।”
বক্তারা আরও বলেন, মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও নাগরিক সমাজের সমন্বয় বাড়াতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। তারা উল্লেখ করেন যে—জন্মগত মর্যাদা, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তাই মানবাধিকার। বিশ্বব্যাপী বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন, রাজনৈতিক নিপীড়ন, সংখ্যালঘু নির্যাতন, নারী-শিশু ও শরণার্থীদের ওপর সহিংসতা বাড়ছে, যা মানবজাতির জন্য বড় হুমকি।
বক্তারা আরও বলেন,
“মানবাধিকার রক্ষা শুধু রাষ্ট্রের দায়িত্ব নয়—এটি সমগ্র মানবসমাজের সম্মিলিত দায়িত্ব। দারিদ্র্য, বৈষম্য ও গণতান্ত্রিক সংকটের এই সময়ে মানবাধিকার রক্ষার চর্চা শক্তিশালী করা জরুরি। ন্যায়বিচারের স্বচ্ছতা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি অসম্ভব।”
মানববন্ধন শেষে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে মানবাধিকারের ইতিবাচক চর্চা গড়ে তুলতে আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে বিভিন্ন পেশাজীবী, সচেতন নাগরিক, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।