
মাধবপুর উপজেলা প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার এমপিওভুক্ত খান্দুরা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক, প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা গত ২৭ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, টানা তিন বছর ধরে মাদ্রাসার বাজেটভুক্ত কোনো মেরামত বা উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়নি। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ফান্ডের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থের হিসাব মিলছে না। অভিযোগকারীদের দাবি—মেয়াদোত্তীর্ণ ম্যানেজিং কমিটির নাম ব্যবহার করে কোনো বৈধ সভা ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সুপার জহিরুল ইসলাম। এমনকি স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেন, ভর্তি ফি, মাঠ সংস্কার, ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়সহ বিভিন্ন খাতের অর্থ সুপার এককভাবে ব্যবহার করছেন এবং কোনো স্বচ্ছ হিসাব দিচ্ছেন না। শিক্ষক–কর্মচারীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, অপমানজনক ভাষা ব্যবহার এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও উঠে এসেছে।
একই সঙ্গে শিক্ষক বদলি, নিয়োগ ও নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক–কর্মচারীরা। চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হলেও অফিসিয়াল রেকর্ডে তা দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। এসব অনিয়মের কারণে মাদ্রাসার স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগকারীদের দাবি—সুপার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রভাব ব্যবহার করে শিক্ষক–কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
অভিযুক্ত সুপার জহিরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। অভিযোগগুলোর কোনো প্রমাণ নেই। কারও অভিযোগ থাকলে সমাধান করে দেব।”
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জীবন ভট্টাচার্য বলেন,
“এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় আমাদের এখতিয়ার সীমিত। তারপরও অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে।”
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা নাসরিন জানান,
“শিক্ষকরা একবার নিজেদের মধ্যে আপসের চেষ্টা করেছিলেন। গুরুতর অভিযোগ যাচাই করে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”