
কামরুল ইসলাম,বিশেষ প্রতিনিধি:
উখিয়া–টেকনাফ সড়কের দুই পাশে বন বিভাগের জায়গা দখল করে বছরের পর বছর ধরে গড়ে উঠেছে দালান, ভাড়া বাসা ও বহুতল অট্টালিকা। উখিয়ার পাতাবাড়ি, হাজামপাড়া, কুতুপালংসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালীদের এসব অবৈধ স্থাপনা প্রকাশ্যেই দাঁড়িয়ে থাকলেও বন বিভাগের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ে না।
বিশেষ করে কুতুপালং বাজার এলাকার অধিকাংশ জমিই বন বিভাগের আওতাধীন বলে জানা গেলেও সেখানে উচ্ছেদ অভিযান প্রায় নেই বললেই চলে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালীদের স্থাপনায় হাত না দিয়ে উল্টো দরিদ্র কৃষকদের ওপর অভিযান চালানো হচ্ছে।
এমন বাস্তবতায় কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উদ্যোগে ধোয়া পালং রেঞ্জের জুমের ছড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে শতাধিক পানের বরজ উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব বরজ ছিল স্থানীয় দরিদ্র কৃষকদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। বছরের পর বছর ধরে ঘাম ঝরিয়ে, ধার-দেনা ও শেষ সম্বল দিয়ে তারা এসব পানের বরজ গড়ে তুলেছিলেন।
উচ্ছেদ অভিযানে মুহূর্তের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায় কৃষকদের স্বপ্ন ও জীবিকা। অনেক পরিবার এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, “বড় বড় দালান যাদের, তাদের কিছু হয় না। আমরা গরিব বলে আমাদের সব শেষ করে দেওয়া হলো।”
স্থানীয় সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেছেন—
বন রক্ষার নামে যদি অভিযানই চালাতে হয়, তাহলে তা কি সবার জন্য সমান হওয়া উচিত নয়? প্রভাবশালীদের অবৈধ দখল বহাল রেখে শুধুমাত্র গরিব কৃষকদের উচ্ছেদ কি ন্যায্য?
এ বিষয়ে বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে সব অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে সমানভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
না হলে বন রক্ষার নামে এই একপেশে অভিযান সামাজিক বৈষম্য আরও গভীর করবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।